তরঙ্গটুডে

আজো স্মৃতির পাতায় বুলবুল আহমেদ

স্ত্রী ডেইজী আহমেদ ও মেয়ে তিলোত্তমা এবং ঐন্দ্রিলার সঙ্গে বুলবুল আহমেদ।

হ্যালোডেস্ক

১৭ জুলাই ২০২১


অভিনেতা বুলবুল আহমেদের জন্ম ১৯৪১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার আগামসি লেনে। বাবা খলিল আহমেদ ও মা মোসলেমা খাতুনের অষ্টম সন্তান তিনি। বাবা ছিলেন তৎকালীন সরকারের অর্থ বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি এবং অভিনেতা ও নাট্যকার। অভিনেত্রী ডেইজি আহমেদ তাঁর স্ত্রী এবং ঐন্দ্রিলা তাঁর কন্যা।

বাবা-মা তাঁর নাম রেখেছিলেন তাবাররুক আহমেদ ওরফে বুলবুল। অভিনয়ে এসে তিনি বুলবুল আহমেদ নামেই পরিচিতি লাভ করেন।

ছেলেবেলায় বুলবুল আহমেদের শখ ছিল চলচ্চিত্র দেখার। কিন্তু বড় ভাইবোনেরা তাঁকে ছবি দেখতে নিতেন না। খুব মন খারাপ করতেন তিনি।

১৯৫৮ সালে বুলবুল আহমেদের অভিনয়ের শুরুটা মঞ্চনাটক দিয়ে। সিলেটের এমসি কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষ রক্ষা’ নাটকে মূল চরিত্র ‘গদাই’-এর ভূমিকায় অভিনয় করেন।

রবীন্দ্রনাথ এর হৈমন্তী নাটকে বাবা ও ছেলের চরিত্র ভিন্ন ভিন্ন সময় অভিনয় করেছিলেন।

১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করার পর রেডিওতে কাজ শুরু করেন তিনি। ‘অনুরোধের আসর’ নামে গানের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঘোষক হিসেবে নাম লেখান।

রেডিওর টাকায় জীবন ঠিকঠাক চলছিল না বলে একসময় তৎকালীন ইউনাইটেড ব্যাংক, যা বর্তমানে জনতা ব্যাংক, সেখানে শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। ১০ বছর ব্যাংকার হিসেবে কাজ করেছেন বুলবুল আহমেদ।

বাংলাদেশ টেলিভিশন চালুর পর নিয়মিত নাটকে অভিনয় শুরু করেন। ১৯৬৮ সালে আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘পূর্বাভাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে টেলিভিশনে তাঁর পূর্ণাঙ্গ অভিনয় শুরু। তবে ‘ইডিয়েট’ নাটকে তাঁর অভিনয় দারুণ সাড়া ফেলে। ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘বরফ গলা নদী’, ‘ইডিয়ট’, ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’, ‘তোমাদের জন্যে ভালোবাসা’, ‘তুমি রবে নীরবে’, ‘টাকায় কি না হয়’, ‘মালঞ্চ’, ‘হৈমন্তী’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘সারাদিন বৃষ্টি’, ‘রূপনগর’, ‘সারাবেলা’ এ রকম তিন শতাধিক নাটকে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। জহির রায়হানের উপন্যাস ‘বরফ গলা নদী’তে অভিনয় করে সবার নজরে আসেন তিনি।

বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ফওজিয়া পারভিন ডেইজি। ছেলেবেলা থেকে দুজনে পরিচিত ছিলেন। ভালোবাসা থেকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের বিয়ে হয়।

টেলিভিশনে বুলবুল আহমেদের অভিনয়জীবন শুরু হয় ১৯৬৮ সালে ‘পূর্বাভাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে।

১৯৭৬ সালে আলমগীর কবির পরিচালিত ‘সূর্যকন্যা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জহির রায়হান পুরস্কার লাভ করেন তিনি। এরপর চারবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

বুলবুল আহমেদ।

বুলবুল আহমেদের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘মোহনা’, ‘মহানায়ক’, ‘পুরস্কার’, ‘সোহাগ’, ‘বৌরানী’, ‘ঘর সংসার’, ‘বধু বিদায়’, ‘ছোট মা’, ‘আরাধনা’, ‘সঙ্গিনী’, ‘সময় কথা বলে’, ‘স্মৃতি তুমি বেদনা’, ‘শেষ উত্তর’, ‘স্বামী’, ‘ওয়াদা’, ‘গাংচিল’, ‘কলমীলতা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দেবদাস’, ‘ভালো মানুষ’, ‘বদনাম’, ‘দুই জীবন’, ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘দি ফাদার’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’।

চলচ্চিত্র প্রযোজিত ছবি হলো ‘অঙ্গীকার’, ‘জীবন নিয়ে জুয়া’, ‘ওয়াদা’, ‘ভালো মানুষ’, ‘মহানায়ক’ ইত্যাদি।

বুলবুল আহমেদ পরিচালিত নাটক ‘মেঘে ঢাকা আকাশ’, ‘তুমি কি সেই তুমি’, ‘একটি প্রেমের জন্য’, ‘মন ছুঁয়ে যায়’, ‘চিরকুট’, ‘অনামিকা’, ‘অন্য মনে’, ‘পলাতক সে’, ‘অকারণে অবেলায়’, ‘বিলেতি বিলাস’, ‘নীলা নামের মেয়েটি’, ‘তৃতীয় পক্ষ’, ‘একা’, ‘এক ঝলক আলো’, ‘জীবন নদীর জোয়ার ভাটা’ ইত্যাদি।

ফেসবুক পেজ

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

March 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031