আজকের দেশ ইতিহাস-ঐতিহ্য তরঙ্গটুডে

ছায়ানটের বর্ষবরণ: বর্ণিল আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ

হ্যালোডেস্ক

১৪ এপ্রিল ২০২৩


শুরু হয়েছে বাংলা নতুন বছর ১৪৩০। চেনা ঢঙে, বর্ণিল আয়োজনে নতুন বছরটিকে বরণ করে নিয়েছে রাজধানীর নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। রমনার বটমূলে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের আয়োজনে সংগীত ও আবৃত্তিতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভোর সোয়া ৬টায় আহির ভৈরব সুরে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সবশেষে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে। এতে ছায়ানটের শিল্পীদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন অন্যান্য শিল্পীও। রবীন্দ্র-নজরুলের গানের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে লোকজ সুরও।

দুই ঘণ্টাব্যাপী এ অনুষ্ঠানে শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকা গানগুলোর মধ্যে ছিল—‘মনমোহন গহন যামিনী’, ‘রাত্রি এসে যেথায় মেশে’, ‘মোরে ডাকি লয়ে যাও’, ‘অন্তরে তুমি আছো চিরদিন’, ‘সংকটের বিহ্বলতা’, ‘আমাদের নানান মতে’, ‘মন মজালে ওরে বাউলা গান’, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘এমন মানব সমাজ কোনদিন গো সৃজন হবে’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ ইত্যাদি।

এবারের আয়োজনে ছায়ানটের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা। অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে তিনি মঞ্চে উঠে সম্প্রীতির বার্তা ও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

লাইসা বলেন, ‘নববর্ষের সূর্যোদয়ের নবীন কিরণ যখন আমাদের আলোকিত করে, তখন ফিরে দেখি ফেলে আসা দিনগুলো। ধারাবাহিক অগ্রগতি দেশের ভবিষ্যতের পাদরেখা হিসেবে আমাদের প্রাণে আশার সঞ্চার করে। অন্যদিকে লোভ, বিদ্বেষ, অসহিষ্ণুতা ও বৈষম্য আমাদের হতাশ করে। সমাজের বিভাজন রেখাকে গভীর ও বিস্তীর্ণ করে আমাদের অর্জনগুলো ম্লান করে দেয়।’

সাহিত্য ও সংগীতের শক্তির কথা জানিয়ে লাইসা আহমদ লিসা বলেছেন, ‘আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত বাংলার সাহিত্য ও সংগীত সমাজের শুভ শক্তিকে জাগ্রত করে সম্প্রীতির বন্ধনকে নিবিড়তর করে চলেছে। দেশজুড়ে এই ধারার গান ও পাঠ সমাজের বিভক্তি অতিক্রম করে অশুভ প্রবণতার বিনাশ ঘটাক। নূতন বছরে অগ্রসর চিন্তার ভিত্তি নির্মাণ করুক। শুভ কর্মপথে ধর নির্ভয় গান, সব দুর্বল সংশয় হোক অবসান। নূতন বছর সর্বজনের জীবনে মঙ্গল বয়ে আনুক। শুভ নববর্ষ।’

বাংলা নতুন বছর উদযাপন শুরু হয় সূর্যোদয় থেকে। তাই শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) ভোর থেকেই রমনা বটমূলে বৈশাখী সাজে উচ্ছ্বাসী মানুষের আগমন শুরু হয়। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বটমূল প্রাঙ্গণ বর্ণিল-জমজমাট হয়ে ওঠে। সংগীতের বিভিন্ন পরিবেশনা শেষে তাদের মুখর সাড়া যেন প্রাণ সঞ্চার করেছে বর্ষবরণ আয়োজনে।

নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে গণপূর্ত অধিদফতর ছিলো সার্বিক সেবায়। এছাড়া ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নিয়োজিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা।

উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে সূচনা হয় ছায়ানটের। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিস্তার ঘটাতে কাজ করে আসছে। সংগঠনটির উদ্যোগে এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের শুরুটা হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। এরপর থেকে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031