কবিতা

বিতাড়িত দেবদূত

সাময়িকী: শুক্র ও শনিবার

-সামুয়েল মল্লিক

কয়েক শতাব্দী আগে।
সবে মাত্র অগ্রহায়ণ মাস শুরু হয়েছে
সোনালি ধানে পরিপূর্ণ খেতগুলো
বাতাসের দোলায় দুলছে দিগন্তরেখা
প্রতিদিনের মতো আজও সূর্য ঢলে পড়েছে পশ্চিমাকাশে
লাল সুর্য ঢেকে দিয়ে আঁধারের পর্দা নামছে ধীরেধীরে।

হঠাৎই আকাশ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে
উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হতে থাকে
চারদিকে আলোর বন্যা
মানুষ হতবিহ্বল। বিস্ফারিত চোখ
সবাই ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসে
সূর্য ডুবে যাবার পরের এসব ঘটনাবলীর জন্য
এ জনপদ মোটেই প্রস্তুত ছিলো না
এমন চোখ ঝলসানো উজ্জ্বলতা আগে কখনও কেউ দেখেনি।

সব মানুষের দৃষ্টি উর্ধ্বমুখী।
মানুষের চিৎকার চেঁচামেচির মাঝেও শোনা যাচ্ছে
একটা তীক্ষ্ণ আওয়াজ
তীক্ষ্ণতা বাড়ছে ক্রমশ
সবার মধ্যেই অচিন্ত্য ভীতিকর অবস্থা
স্পষ্ট হয়ে উঠছে তীব্র পাখা ঝাপটানোর শব্দ
লাখ লাখ দেবদূত নেমে আসছে জমিনে।

অলৌকিক দেবদূতেরা নামছে পথে-মাঠে-ঘাটে
বাড়ির আঙিনায়-ফুলবনে
চারদিকে সম্মোহনী এক সুরের মূচ্ছর্ণা
সুরমার মতো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল অগণিত দেবদূত
ঘন কুয়াশার আস্তরণে ঢেকে গেল প্রকৃতি
কেউ ভালোভাবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই সুরমাকুয়াশা
অদৃশ্য হয়ে যায়।
হতবাক মানুষেরা সম্বিৎ ফিরে পেলে সব স্বাভাবিক হয়ে আসে।
আর এটিই আজও কিংবদন্তি হয়ে মানুষের মুখে মুখে।

তবে মানুষেরা জানেনা সেদিন প্রকৃতিপক্ষে কী ঘটেছিলো
এবং তারা জানেনা অদৃশ্য দানাগুলো কার কার ধমনীতে
প্রবেশ করেছিল নিঃস্বাসের সাথে—মিশে গিয়েছিল
শিরা-উপশিরায় রক্তকণিকার সাথে।

Add Comment

Click here to post a comment

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031