বিয়ের সাজ

হবু কনেদের বিয়ের সাজ মানে চ্যালেঞ্জিং

হ্যালোডেস্ক

শুভ বিবাহ!
বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে থাকেন হবু কনেরা! তবে এটাও নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে গিয়েছেন যে বিয়ের পরিকল্পনা একটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া! আর এ ধরণের প্রক্রিয়ায় সাধারণত বিভ্রান্তি ঘটাই স্বাভাবিক। বিয়ের সাজ ও চুলের স্টাইল নিয়ে কনেরা থাকেন বিভ্রান্তিকর অবস্থায়।

আপনি হয়ত সবসময়ই নতুন মেইক-আপ ট্রেন্ড নিয়ে খুব সচেতন থাকেন। নতুন প্রসাধনী বাজারে আসার পর হয়ত আপনিই সবার আগে তা হস্তগত করেন। কিন্তু এই আপনিই হয়ত বিয়ের সাজের বেলায় হতবিহ্ববল হয়ে পড়েছেন! কোন উপায়ে নিজেকে সবচেয়ে শুভ দিনটায় অনন্য করে তুলবেন, তা ভেবে ভেবে হয়ত আপনার দিন প্যারায় কাটছে।

সাধারণত এশিয়া মহাদেশীয় কনেরা এমনিতেই একটু লাবণ্যময়ী রূপের অধিকারী হয়। আর সেই রূপের মেইক-আপটিও তাই হওয়া চাই নিখুঁত ও গ্ল্যামারাস। চলুন জেনে নিই তাহলে কিছু বিয়ের সাজ সম্পর্কিত বিষয়।

মডেল: ফারহানা রহমান তিশা
মেক-আপ: শিউলী তাবাচ্ছুম

কী করবেন ?
১. বিয়ের অন্তত ৬ মাস আগে থেকে একজন মেইক-আপ আর্টিস্টের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার নিজের ইচ্ছে ও পরিকল্পনার কথা তাকে জানান এবং এর সাথে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোও তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে নিন।
২. মেইক-আপ বাজেটের কথা আবার ভুলে যাবেন না যেন। কারণ আপনাকে বেশ খানিকটা অর্থ কিন্তু খরচ করতেই হবে, আপনি একজন মেইক-আপ আর্টিস্ট পুরোটা সময় জুড়ে আপনার পাশে রাখতে পারেন।
৩. মেইক-আপ আর্টিস্টের নিজস্ব স্টাইলের সাথে মানিয়ে নিন। তার কাজের পোর্টফোলিও চেক করুন, অন্যান্য ক্লায়েন্টদের সাথে কথা বলুন, ট্রায়াল মেইক-আপ সেশনের ব্যবস্থা থাকলে তাও পরখ করে দেখুন। এছাড়া তার দেয়া ইউনিক টিপসগুলোর প্রতিও নজর দিতে পারেন।
৪. ট্রায়াল সেশানগুলোর জন্যও একটি বাজেট বরাদ্দ রাখুন। কারণ আর্টিস্ট কিন্তু আপনার সেরা সাজটিকে আনার জন্য সময় ও পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
৫. ট্রায়াল সেশনে উপস্থিত হবেন আপনার বিয়ের পোশাকেই। কারণ একটি কালো ফতুয়া বা এই ধরণের কোন পোশাক কিন্তু আপনার বিয়ের সাজকে পূর্ণাঙ্গভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবে না।
৬. চুলের স্টাইলকে আকর্ষনীয় ও উৎসবমুখর দেখাতে ওড়নার ব্যবহারে একটু নজর দিন। অনেক সময় দারুন সব চুলের স্টাইল ভারী ওড়নার নিচে হারিয়ে যায়।
৭. রেফারেন্স হিসেবে ট্রায়াল সেশানের ছবিগুলো রেখে দিতে পারেন, এতে সুবিধা হয়। তবে মনে রাখবেন প্রত্যেকটা সাজই যেন আপনার বৈশিষ্ট্য, চুল এবং গাত্রবর্ণকে ফুটিয়ে তোলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি যদি মোগল সাজে সাজতে চান, আপনাকে আপনার মতই দেখতে লাগা উচিৎ, অন্য কারো মত নয় । অর্থাৎ বিয়ের সাজে নিজের অনন্যতাকেই ফুটিয়ে তুলুন।
৮. আর্টিস্টের পরামর্শকে গুরুত্ব দিন। তিনি জানেন কোন রঙ, কোন মাত্রায় ব্যবহার করলে তা আপনার রূপকে ফুটিয়ে তুলবে।
৯. বিভিন্ন ধরণের কৃত্রিম আই ল্যাশ এখন পাওয়া যায়। সবগুলোই নিজের চোখে বসিয়ে পরখ করে নিন কোনটায় কেমন লাগছে। এক্সটেনশান, ইন্ডিভিজুয়াল ল্যাশ অথবা কাস্টমাইজড ফুল সেট – সবগুলোই পরখ করে দেখুন।
১০. আলোর পরিস্থিতি অনুযায়ী রঙও বদল হয়। যেমন ধরুন আপনি সান্ধ্য অনুষ্ঠানের জন্য ট্রায়াল নিলে, আপনার ফটোসেশান হবে সফট মুড লাইটিঙে, যেটি প্রখর রৌদ্রে করলে হয়তবা আপনার মেইক-আপকে অনেক উজ্জ্বল দেখাবে। কাজেই আলোর ধরণ বুঝে মেইক-আপ বিচার করুন ।

 

মডেল: ফারহানা রহমান তিশা

কী করবেন না ?
১. ভুলেও বিয়ের সাজ নিজে নিজে করার চেষ্টা করবেন না। কারণ আপনি যত ভালোই সাজতে জানুন না কেন, বিয়ের অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগে আপনি কিন্তু আর ১০ জন কনের মতই স্বাভাবিকভাবে নার্ভাস থাকবেন। ওই নার্ভাসনেস মাথায় নিয়ে বিয়ের সাজ সাজতে যাবেন না!
২. আপনার কোন কাছের বন্ধু বা আত্মীয়কেও বলবেন না বিয়ের সাজ সাজিয়ে দিতে। হতে পারে তিনি আগে অনেকবার কোন পার্টিতে যাওয়ার আগে অনেক ভালো সাজিয়েছেন আপনাকে। কিন্তু কোন ধরণের লাইটিঙে কোন সাজ দিতে হবে, প্রোফেশনাল আর্টিস্টের মত এই বিষয়ে তার কোন ধারণা আছে কি? কিংবা বিয়েশাদির দুশ্চিন্তায় হঠাৎ করে দেখা দেয়া ব্রণ কিংবা চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার মত পর্যাপ্ত প্রোফেশনাল সরঞ্জামাদি তার কাছে আছে কি?
৩. একটুখানি খরচ কমাতে একটি বিশেষ প্রসাধন পণ্যের সাথে দেয়া মেইক-আপ প্যাকেজ অফার গ্রহণ করতে যাবেন না যেন। বিয়ের দিন সারা মার্কেটে বা এদিক থেকে ওদিক ছুটোছুটি করতে নিশ্চয়ই আপনি চাইবেন না!
৪. পর্যাপ্ত গ্রুমিং ছাড়া কোন ট্রায়াল সেশানে অংশ নেবেন না। আপনার শেইপলেস আই-ভ্রু, ফেশিয়াল হেয়ার অথবা রুক্ষ ত্বক – এর কোনটাই নিখুঁত সাজের উপযোগী নয়।
৫. ব্রাইডাল মেইক-আপ ট্রেন্ড অনুযায়ী সাজার দরকার নেই। ট্রেন্ডকে ফলো করতেই যদি হয় তো বৌভাতের অনুষ্ঠানে করুন। বিয়ের দিনটিতে সবাই যেভাবে সাজে, সেভাবে না সেজে একটু নিজের মত করে, অন্যরকম করে সাজতে চেষ্টা করুন।
৬. ম্যাগাজিনের কভার ফটোতে দেখা ব্রাইড মডেলের শিমারি লুক দেখে তা আবার অনুকরণ করতে যাবেন না যেন! আপনাকে তাহলে একটা ডিস্কো বল ছাড়া আর কিছুই মনে হবে না। বরঞ্চ চোখে আর চিকবোনে একটুখানি শিমারি টাচ রাখতে পারেন।
৭. নড়াচড়ার সুবিধার্থে চুলটাকে ছেড়ে না রাখলেই ভালো হয়। বারবার চোখেমুখে চুল এসে পড়লে ব্যাপারটা ভাল লাগার কথা না খুব একটা। আর তাছাড়া খোলা চুলে আপনি ঘেমেও যেতে পারেন।
৮. প্রসাধন সামগ্রী সম্পর্কে এতকাল যা পড়ে এসেছেন, সবটাই বিশ্বাস করে ফেলবেন না। অনেক পণ্যেই বলা হয় থাকে যে, তা ১৮ ঘণ্টা যাবৎ স্থায়ী হয়। ব্যাপারটা মোটেও তা নয়।
৯. নানা মুণির নাদনা মত। তাছাড়া যার যার রুচিও ভিন্ন। কাজেই বিয়ের সাজের ব্যাপারে একসাথে সবার পরামর্শ গ্রহণ করতে যাবেন না। এক পর্যায়ে আপনি কিন্তু বিষণ্ণ হয়ে পড়বেন।
১০. বিয়ের সাজে নিজেকে একটু আলাদা সাজে সাজা সবার নজর কাড়া, এমন সাজেই কনেরা নিজেকে দেখতে চায় তাই বর্তমান ট্রেন্ডকে ফলো করে অভিজ্ঞ মেকআপ আর্টিস্টের কাছ থেকে নিজেকে মনের মতো করে সেজে নিয়ে হতে পারেন সবার চোখে অনন্যা! বিয়ের সাজে হোক না একটু ভিন্নতা!

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031