ইতিহাস-ঐতিহ্য

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে ৩৬৪ বছরের মসজিদটি এখনো তেমনই আছে

ফৌজিয়া-তুজ-জাহান।।  প্রাচীন স্থাপত্যকলার এক অনন্য নিদর্শন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক বড় শরীফুর মসজিদ। উপজেলার শরীফপুর গ্রামে ১৬৫৭ সালে নির্মিত হয় একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। মসজিদটি এখনো আগের মতোই দেখতে। পৌনে ৪০০ বছরেও এটির সৌন্দর্য নষ্ট হয়নি।

চুন-সুরকির মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই সেখানে মানুষ ভিড় জমান। অনেকে এসে নামাজ পড়েন। তিন জেলার মোহনায় এ মসজিদটির অবস্থান। পাশে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা। কিছু দূরে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা।

মসজিদের পেছনে রয়েছে ২৭.২৪ একর আয়তনের নাটেশ্বর দীঘি। এর মালিকানা কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ ও চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার বাসিন্দাদের। ওই দীঘিরপাড়ে রয়েছে সৈয়দ শাহ শরীফ বাগদাদি পীরের মাজার। মসজিদ, দীঘি ও মাজারকে ঘিরে এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে বলে অভিমত স্থানীয়দের।

সরাসরি গেলে দেখতে পারবেন, মসজিদের বাইরের দৈর্ঘ্য ১৪.৪৮ মিটার ও প্রস্থ ৫.৯৪ মিটার। মসজিদের ওপরে তিনটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজে রয়েছে পদ্মফুলের নকশা। মসজিদের সামনের দেয়ালে ফার্সি ভাষায় শিলালিপি রয়েছে।

সেখানে উল্লেখ আছে, জনৈক হায়াতে আবদুল করিম নামে এক ব্যাক্তি মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। হায়াতে আবদুল করিমের পরিচয় নিয়ে দুটি মত রয়েছে, একটি হচ্ছে- তিনি নাটেশ্বর নামের এক রাজার কর্মকর্তা ছিলেন। আরেকটি মত হচ্ছে- তিনি সৈয়দ শাহ শরীফ বাগদাদি নামের একজন দরবেশের মুরিদ ছিলেন।

এদিকে মসজিদের পেছনে ২৭ বিঘা আয়তনের শান্ত জলের বড় দীঘি। সেটির পাড়ে বসলে স্নিগ্ধ হাওয়ায় ঝরে যাবে দেহের যত ক্লান্তি। হাতে কিছুটা সময় নিয়ে আসতে পারেন । ঘুরে দেখলে অবশ্যই ভালো লাগবে। জানতে পারবেন পুরনো এই মসজিদটির ইতিহাস সম্পর্কে।

বড় শরীফপুরের এ মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই সেখানে মানুষ আসেন। এ মসজিদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। মসজিদের ভিতরে-বাইরে মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক মানুষ নামাজ পড়তে পারেন।

আরো জানতে পারবেন, জেলা সদর থেকে মসজিদটি ৪০ কিলোমিটার ও উপজেলা সদর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ মসজিদের একদিকে ডাকাতিয়া নদী, অন্যদিকে নরহ খাল। অপরদিকে মনোহরগঞ্জ-হাসনাবাদ সড়ক। পেছনে রয়েছে বিশাল নাটেশ্বর দীঘি। দীঘির পাড়ে মাজার শরীফ। এখানে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে থেকে জানা যায়,  এটি কুমিল্লা জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন মসজিদ। বর্তমানে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতায় সংরক্ষিত। তিন জেলার মোহনায় মসজিদ, দীঘি ও মাজারকে ঘিরে একটি প্রত্ন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031