রকমারি

তিনবার আত্নহত্যার চেষ্টা করেছিলেন অভিনেত্রী রুপা গাঙ্গুলী

হ্যালোডেস্ক

  • ভারতীয় অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় ১৯৯৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল বাংলা কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রটি। এই চলচ্চিত্রে কপিলা চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, দাম্পত্য কলহের জেরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। যন্ত্রণায় হতাশায় তিন তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন। অবলীলায় প্রকাশ করেছেন দাম্পত্য কলহের কথা।

১৯৯২ সালে রূপা গাঙ্গুলি বিয়ে করেন ধ্রুব মুখোপাধ্যায়কে। সমস্যা শুরু এই বিয়ে নিয়েই। এক সাক্ষাৎকারে রূপা জানিয়েছেন, বিয়ে টিকিয়ে রাখতে, দাম্পত্য বজায় রাখতে কী না করেছেন তিনি। তার ভাষ্য, তখনও আমায় ঘিরে দ্রৌপদীর জনপ্রিয়তা। রাস্তায় বেরোলে সবাই আগ্রহ দেখায় আমাকে নিয়ে। ছোট-বড় পর্দা মিলিয়ে অনেক কাজ হাতে।

তারপরেও ‘আমি বিবাহিত’, এই কথা প্রতি পদে মনে রেখে একজন বাঙালি ঘরের মেয়ে যা যা করেন আমি সবটাই করেছি।

সকাল ৯টার আগে আর রাত ১০ টার পর ফোন ধরতাম না। একা আমার নামে নিমন্ত্রণ কার্ড এলে সেখানে যেতাম না। শুট শেষ হলেই মেকআপ না তুলে প্রায় ছুটে বাড়ি ফিরতাম।

তারকা হিসেবে কোনো হামবড়াই ভাব দেখাইনি ধ্রুবর কাছে। কাজের লোক না এলে ঘর ঝাঁট দিতাম। মুছতাম। বাসন মাজতাম। কাপড়ও কেচেছি। তারপরেও দেখি ধ্রুব আমায় নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছে। দর্শক ‘দ্রৌপদী’ হিসেবে আমায় মেনে নিয়েছেন। ভালোবেসেছেন। তাই আমি জনপ্রিয়। এটাও মেনে নিতে পারেনি। এখানে আমার দোষ কী?’

অত্যাচার শুরু এভাবেই। ধাপে ধাপে তা বাড়তে বাড়তে ভয়ানক আকার ধারণ করল বলে দাবি রূপার।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে মুম্বাই ছেড়ে ধ্রুবর সঙ্গে কলকাতায় চলে এলাম। কাজ গেল। তাও হজম করলাম। অন্তত স্বামী থাক। এই ভেবে। কিন্তু তাতেও ওর মুড ঠিক হলো না।

তারকা স্ত্রীকে ধ্রুব না পারে ফেলতে না পারে গিলতে। একসময় হাত খরচের টাকাটুকুও দেওয়া বন্ধ করে দিল। আমি পড়লাম অগাধ জলে। ফের শুরু করলাম কাজের খোঁজ। মনে হল, টাকা এনে দিতে পারলে যদি স্বামীর মন পাই। প্রথমে তো কাজই পাই না। তারপর যা কাজ পেতাম করতাম। পুরো টাকা ধরে দিতাম ধ্রুবকে। তাতেও মন গলল না স্বামীর।

অশান্তি বাড়ছে। ঝগড়া চরমে। রোজ ডিভোর্সের পেপার আনছি। ধ্রুব ক্ষমা চাইছে। আমি ভাবছি, আরেকবার চেষ্টা করতে ক্ষতি কী? এভাবে যখন নিজের কাছে নিজেই অসহ্য তখন ঠিক করলাম, নিজেকে শেষ করে দেব। একবার নয়, তিনবার।

প্রথমবার, ছেলে তখনও জন্মায়নি। প্রচুর ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলাম। ১৯৯৭-এ ছেলে জন্মানোর পর আরও দু-বার। প্রতিবার ঈশ্বর আমায় ফিরিয়ে দিয়েছেন। মনে হয়, আমার যাওয়ার সময় হয়নি বলে।’

একটা সময় সংসার-মানুষের ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইবাসী হন রূপা। ধ্রুব কিন্তু আকাশকে ছাড়েনি তার মায়ের কাছে। রূপাও টানা-হ্যাঁচড়া করেননি ছেলেকে নিয়ে। যাতে কচি মনে কোনো আঁচড় না লাগে। মায়ের কর্তব্যেও অবহেলা করেননি।

সেই বিচ্ছেদের পর একাধিক প্রেমে জড়িয়েছেন তিনি। তার লিভ টুগেদারের মুখরোচক খবরও ছড়িয়েছে বারবার। কিন্তু প্রেমিক বা স্বামী কারোর কাছেই আর সংসারের জন্য ফিরে আসেননি তিনি।

২০১৫ সালে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির হয়ে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি হেরে যান তৃণমূলপ্রার্থী লক্ষ্মীরতন শুক্লার কাছে। ওই বছরেই তিনি রাজ্যসভায় নভজ্যোত সিং সিধুর জায়গায় আসেন।

শক্তিমান একজন অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রূপা। এখন আর অভিনয়ে তেমন নিয়মিত নন। তবে সক্রিয় রয়েছেন রাজনীতিতে।

তথ্যঃ দৈনিক জনকণ্ঠ

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031