গল্প

স্বপ্নের গান

সাময়িকী: শুক্র ও শনিবার

-প্রদীপ গুপ্ত

গতকাল রাতের ঝড়বৃষ্টিতে বড় রাস্তার হোর্ডিংগুলোতে যতো বিজ্ঞাপনের ফ্লেক্স টাঙানো ছিল সবকটাই একদম ছিঁড়েখুড়ে একশা। সায়নের আজ খুব আনন্দের দিন। ওর আজ খুব ভালো উপার্জন হবে, ভোর হতেই আনন্দে শিস দিতে দিতে বনবেড়ালের মতো হোর্ডিংএর পোস্টগুলোতে উঠে,উঠে সেগুলোকে এক হেঁচকায় নিজের পিঠের ভেতর ফেলতে লাগলো সায়ন।

উফ্, এতো ভারী যে ওর পিঠ নুইয়ে পড়েছে। শিরদাঁড়াটা,টনটন করছে ব্যথায়। তবু মনটা আজকে ওর দারুণ খুশ। অনেকদিন এতো মাল ও গস্ত করে নি।
রেল বস্তির মুখেই একটা ছোট ব্যানার, দুই কোন ছিড়ে লতপত করে ঝুলছে। পিঠের মালগুলোকে নামিয়ে রেখে ব্যানারটা খুলে ধরলো সায়ন। দাঁড়িওয়ালা একটা,বুড়োর মুখ, এ মুখটাকে এর আগে দেখেছে সায়ন। ওদের বস্তির ক্লাবে মাঝে মাঝেই এই দাড়িবুড়োর মুখটাকে পেছনে টাঙিয়ে নাচগান করে ক্লাবের ছেলেরা। একবার ফের টাঙিয়ে দিতে গিয়েও কি মনে হলো —
— “ধুস কী হবে এটাকে না নিয়ে — দশটা পাত্তি পেলেও তো পাওয়া যাবে –”

রেলবস্তিতে ওদের ঘরের সামনে এনে পিঠ থেকে বস্তাটাকে নামিয়ে রাখলো সায়ন।
— ” মা.. এগুলোকে একটু সাইজ করে রাখো তো, আর খেতে দাও শিগগির। মোটাদার দোকান আবার দুটোর পর বন্ধ করে দেয়।”
মোটাদার,দোকান থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে এলো। উফ্ ছশো টাকা! ভাবা যায়! রোজ কেন এরকম ঝড়বৃষ্টি হয়না —
ঘরের দোরে পা রাখতেই ধুপকাঠির একটা মিষ্টি সুগন্ধ আর একটা রিনরিনে সুরে থমকে দাঁড়ালো সায়ন। সেই বুড়োমানুষের মুখটাকে কেটে একটা পিচবোর্ডের ওপর আঠা দিয়ে সেঁটে তার সামনে গান গাইছেন মা —
” চিত্ত মম যখন যেথা থাকে
সাড়া যেন দেয় সে তোমার ডাকে –”
মা — এতো সুন্দর গান — তাহলে ছেলেবেলায় মা যে গল্পগুলো করতো সে,সব সত্যি! মধ্যমগ্রামে ওদের বাড়ি সবসময় গমগম করতো মানুষের ভীড়ে, আর —

Add Comment

Click here to post a comment

ফেসবুক পেজ

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30